আমলকী

আমলকী গাছের পরিচিতি

আমলকী আমাদের দেশের একটি অতি পরিচিত, সহজপ্রাপ্য ও সহজলভ্য ফল। বাংলাদেশের প্রায় সকল স্থানেই কম-বেশী আমলকী জন্মে থাকে। অত্যাধিক পরিমানে ভিটামিন সি থাকার কারনে আমলকীকে ভিটামিন সি -এর রাজা বা KING of Vitamin-C বলা হয়।


আমলকী গাছের উচ্চতা ৮-১৮ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাতা ২ ইঞ্চি লম্বা হয় আর পাতার রঙ হালকা সবুজ। আমলকী ফল গোলাকৃতি, রঙ হালকা সবুজ। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই আমলকীর গাছ দেখতে পাওয়া যায়। গাছের বয়স ৪-৫ বছর হলেই গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত,মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা , মালয়শিয়া ও চীনে আমলকী পাওয়া যায়।



১০০ গ্রাম আমলকীতে যা থাকে

ভিটামিন সি থাকে ৪৬৩ মিলিগ্রাম, শর্করা ১৬.২ গ্রাম, আঁশ ৩.৪ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৭০ কিলোক্যালরি, ক্যালরি ৩২ কিলোক্যালোরি, ক্যারোটিন ৪৭০০ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩২ মিলিগ্রাম, পানি ৯১.৪ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৭ গ্রাম, প্রোটিন ০.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩৪ গ্রাম, আয়রন ১.২ মিগ্রা, ভিটামিন বি১- ১০.০২ মিগ্রা, ভিটামিন২- ২০.০৮।



আমলকীর ভেষজ ব্যবহার
  •  প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকায় নিয়মিত ২/১টি করে আমলকী খেলে ভিটামিন সি এর অভাবজনিত রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 
  •  আমলকী চুলের টনিক হিসেবে কাজ করে এবং চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য এটি একটি অপরিহার্য উপাদান। 
  •  আমলকী খেলে শুধু চুলের গোড়াই শক্ত হয় না, চুল দ্রুত বড় হতেও তা সাহায্য করে।
  •  খুশকিমুক্ত ও কম বয়সে চুল পাকা রোধে আমলকী বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 
  •  প্রতিদিন সকালে মধুর সঙ্গে আমলকীর রস মিশিয়ে খেলে চর্মরোগ নিরাময় হয়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় ও মুখের চামড়ায় কোনো দাগ পড়ে না। 
  •  নিয়মিত ২/১টি করে আমলকী খেলে পেটের আলসার দূরীভূত হয়। 
  •  আমলকীর রস কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পাইলস রোগ থেকে মুক্তি দেয়। 
  •  অন্ত্রের রোগ নিরাময় ও ক্রনিক কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এটি সহায়ক। 
  •  খাওয়ার আগে মাখন ও মধুর সঙ্গে আমলকীর গুঁড়া মিশিয়ে খেলে ক্ষুধামন্দা দূর হয়। 
  •  আমলকী হৃদপিণ্ডের পেশি শক্তিশালী করে ও হূদযন্ত্রের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। 
  •  এছাড়া প্রতিদিন আমলকীর রস খেলে নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ রোধে তা সহায়তা করে ও দাঁতকে শক্তিশালী করে। 
  •  চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে আমলকী খুবই উপকারী। এছাড়া চোখ লাল হওয়া, চুলকানো ও চোখ দিয়ে পানি পড়া রোধেও আমলকী বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 
  •  আমলকীর টক ও তেতো মুখে রুচি ও স্বাদ বাড়ায়। 
  •  কফ, বমি, অনিদ্রা, ব্যথা-বেদনায় আমলকী অনেক উপকারী। 
  •  নতুন রক্ত, গোশত ও হাড় তৈরীতে বিশেষভাবে কাজ করে। 
  •  শরীর ঠাণ্ডা রাখে, শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে, মাসল টোন মজবুত করে। 
  •  শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট ঝরাতে সাহায্য করে। 
  •  পায়খানা স্বাভাবিক রাখা ও পুরুষের দেহে বীর্যবর্ধক হিসেবে কাজ করে। 
  •  অ্যাসিডিটি, স্কার্ভি ইত্যাদি নানারকম সমস্যায় আমলকী কার্যকর। 
  •  ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল লেভেলেও কম রাখাতে যথেষ্ট সাহায্য করে। 
  •  এ্যসিডিটি’র জন্য এক গ্লাস দুধ বা পানির মধ্যে আমলকী গুঁড়ো ও সামান্য চিনি মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন। এ্যাসিডেটের সমস্যা কম রাখতে সাহায্য করবে। 
  •  আমলকীর জুস ব্রঙ্কাইটেস ও এ্যাজমার জন্য উপকারী। 


Comments

Popular posts from this blog

নয়ন তারা

কালমেঘ

বহেড়া