চিরতা

চিরতা গাছের পরিচিতি


চিরতা একটি ভেষজ উদ্ভিদ বাংলাদেশ সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর জন্মে। Gentianaceae ফ্যামিলির উদ্ভিদটির বৈজ্ঞানিক নাম Swertia chirata. 


চিরতা বর্ষজীবি উদ্ভিদ। গাছটির গড় উচ্চতা প্রায় দেড় মিটার। গাছের পাতা কম-বেশী ১০ সে.মি. দীর্ঘ। পাতার অগ্রভাগ সূঁচালো। ফুল বৃন্তহীন, জোড়ায় জোড়ায় বিপরীতমুখী হয়ে ফোটে। ফুল হালকা সবুজের সঙ্গে গোলাপী মেশানো প্রত্যেক পাপড়ি লতিতে এক জোড়া সবুজ গ্রন্থি থাকে। ফল ৬ মি.মি. কিম্বা তারও বেশী লম্বা এবং ডিম্বাকৃতি।



চিরতা সম্পর্কিত মহানবী (সঃ) এর উক্তি


একদা রাসূলে পাক (সা.) এর মহিয়সী বিবিগণের মধ্যে কোনো এক জনের আঙুলে ফোঁড়া বের হয়। তাঁর বর্ণনা মতে, ‘রাসূলে পাক (সা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার কাছে কি যারিরাহ (চিরতা) আছে? আমি বললাম জী, হ্যাঁ। রাসূলে পাক (সা.) এরশাদ করলেন, ‘ফোঁড়ার ওপর যারিরাহ লাগিয়ে দাও এবং এই দোয়া পাঠ কর। 

চিরতার ভেষজ ব্যবহার
  •  ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে ৫ থেকে ১০ গ্রাম চিরতা চার কাপ পানিতে সিদ্ধ করে দুই কাপ করুন। এরপর ওই পানি ছেঁকে সকালে অর্ধেক এবং বিকেলে অর্ধেক করে খেতে দিন। জ্বর ভালো হয়ে যাবে। 
  •  ডায়রিয়া ও লিভারের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে চিরতার পানি ব্যবহৃত হয়।
  •  অ্যালার্জিতে শরীর ফুলে উঠলে চিরতার পানি খেলে উপকার পাবেন। রাতে পাঁচ গ্রাম চিরতা ২৫০ মিলিলিটার গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে ওই পানি দু-তিনবারে খান; অ্যালার্জি কমবে।
  •  হাঁপানির প্রকোপ বেশি হলে আধা গ্রাম চিরতা গুঁড়া তিন ঘণ্টা পর পর মধু মিশিয়ে দুই থেকে তিনবার অল্প অল্প করে চেটে খান; হাঁপানির প্রকোপ কমবে।
  •  গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বমিভাব হলে এক গ্রাম চিরতা গুঁড়া করে চিনির পানিতে মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়ে যাবে। এ ছাড়া ঘন ঘন বা জ্বরের কারণে বারবার বমি হয়ে পেটে কিছুই থাকে না। সে ক্ষেত্রে দুই কাপ গরম পানিতে পাঁচ গ্রাম চিরতা একটু থেঁতো করে ভিজিয়ে রাখুন। দু-তিন ঘণ্টা পর ছেঁকে পানিটা অল্প অল্প করে খান; সমস্যা থাকবে না।
  •  যেকোনো ধরনের চুলকানিতে ২০ গ্রাম চিরতা অল্প পানি দিয়ে ছেঁকে লোহার কড়াইয়ে সরিষার তেল গরম করে তাতে ভাজুন, যেন পুড়ে না যায়। এরপর নামিয়ে ছেঁকে অল্প অল্প করে নিয়ে চুলকানিতে ঘষে ঘষে লাগান। তিন দিনের মধ্যে চুলকানি কমে যাবে।
  •  কৃমির উপদ্রব হলে ২৫০ থেকে ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত চিরতা অল্প মধু বা একটু চিনি মিশিয়ে খান; কৃমি কমবে। এ ছাড়া কৃমির কারণে যদি পেটে ব্যথা হয়, তাও সেরে যাবে।
  •  চুল পড়ে যাওয়ায় তিন গ্রাম চিরতা এক কাপ গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেই পানি ছেঁকে মাথা ধুয়ে ফেলুন। চুল পড়ে যাওয়া কমবে। তবে এক দিন পর পর চার দিন চুল ধুতে হবে। এ ছাড়া ২৫ গ্রাম চিরতা ফুল ২০০ গ্রাম নারিকেল তেলে ভেজে ওই তেল মাথায় ব্যবহার করুন। খুশকি বা স্কাল্পে কোপনো সমস্যা থাকলে সেরে যাবে।


Comments

Popular posts from this blog

কালমেঘ

নয়ন তারা

বহেড়া