রসুন

রসুন

রসুন শুধু স্বুস্বাদুই নয় , ইহা একটি স্বাস্থপোকারী বিভিন্ন ফাইটোক্যামিক্যালস্‌ সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাদ্য। রসুন সৃষ্টিকর্তার একটি মহান নিয়ামত। রসুনে রয়েছে ভিটামিন সি,পটাশিয়াম, আঁশ,ফলিক এ্যাসিড,ক্যালসিয়াম, আয়রণ এবং প্রোটিন। তবে রসুনে সোডিয়াম কম এবং কোন ফ্যাট নাই। এক কথায় রসুনের গুনের শেষ নেই। 

রসুনের এর বৈজ্ঞানিক নাম Allium sativum।


রসুনের ভেষজ ব্যবহার
  • হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে: নিয়মিত রসুন খেলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে। রসুন রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে এবং রক্তনালীর বাঁধা দূর করে। এছাড়াও রসুন রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রকম সমস্যার ঝুঁকি কমে যায় অনেকটাই।
  •  ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: প্রতিদিন অন্তত এক কোয়া করে রসুন খেলে অনেক ধরণের ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ব্রেস্ট ক্যান্সার ও অন্যান্য কিছু প্রাণঘাতী ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে রসুন অনন্য। এছাড়াও যারা প্রতিদিন ১০ গ্রামের বেশি পরিমাণে রসুন খান তাদের প্রষ্টেট ক্যাসার হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক কম। 
  •  ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাল রোগের ঝুঁকি কমায়: রসুন এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ভাইরাল গুনের জন্য জনপ্রিয়। ইকোলাই এবং টাইফয়েড জীবাণু ধ্বংস করার মতো ক্ষমতা রাখে রসুন। এছাড়াও ভাইরাস জনিত জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদির প্রকোপ কমাতে সহায়তা করে রসুন। রসুনের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতার কারণে নিয়মিত রসুন খেলে পেটে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফলে রসুন খেলে পেটের সমস্যা কমে। 
  •  ওজন কমায়: বেশ কিছু গবেষনায় দেখা গিয়েছে যে নিয়মিত রসুন খেলে ওজন কমে। গবেষকদের মতে নিয়মিত রসুন খেলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে না। নিয়মিত রসুন খেলে কোমরের পরিধি কমে যায়। তাই প্রতিবেলার খাবারের সাথে এক কোয়া করে কাঁচা রসুন খান। যে কোনো তৈলাক্ত খাবার খেতে হলে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে রসুন খেতে হবে। তাহলে চর্বি জমার হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাওয়া যাবে। 
  •  যৌবনের প্রারম্ভ থেকেই যদি কেউ ১/২ চামচ কাচা আমলকির রসের সাথে ১/২ কোয়া রসুন বাটা মিশিয়ে খায়, বার্ধক্য দেরিতে আসে। যৌবনের সজীবতা অনেকদিন বজায় থাকে। 
  •  গলা ব্যথা ও টনসিলের প্রদাহে রসুনের গরম ভাপ নিলে উপকার পাওয়া যায়।
  •  বীর্য পাতলা হলে, অল্প গরম দুধের সাথে ২/১ কোয়া রসুন বেটে নিয়মিত খেতে হবে। এভাবে খেলে যক্ষার প্রতিশেধক হিসেবেও কাজ করে।
  •  অনেক খাওয়া দাওয়ার পর ও শরীর শুকিয়ে যেতে থাকলে ১/২ কোয়া রসুন বেটে এক পোয়া দুধে ফুটিয়ে খেলে ওজন বাড়বে।
  •  বাচ্চার হুপিং কাশিতে পায়ের নিচে ভেসলিন এর প্রলেপ লাগিয়ে ২/৩ কোয়া রসুন বেটে লাগাতে হবে।
  •  বাতের ব্যাথায় গাওয়া ঘি এর সাথে ২/৩ কোয়া রসুন বাটা খেতে হবে। তাছাড়া সরিষার তেলে রসুন ভেজে মালিশ করা যেতে পারে।
  •  দুই বা এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খেয়ে একটু গরম দুধ খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়, কৃমি দূর হয়, শরীরের জড়তা কাটে। তাছাড়াও চুলকানি ও রাতকানায় উপকার পাওয়া যায়।
  •  কুকুর কামড়ালে অবশ্যি ইঞ্জেকশন নেবেন। পাশাপাশি ২-৫ ফোটা রসুন এর রস অল্প দুধে মিশিয়ে খাবেন। 
  •  এমফাইসিমা (এক ধরণের হাপানি যাতে শ্বাস ছাড়তে কষ্ট হয়) এর উপশমের জন্য ৫/৭ ফোটা রসুনের রস ঠান্ডা দুধে মিশিয়ে রোজ খেতে হবে।
  •  সবচেয়ে মজার বিষয় হল, রসুনে রয়েছে ইফডবল নামে এক ধরনের রাসায়নিক উপাদান যা দেহের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সুতরাং প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দু-এক কোয়া রসুন রাখলে নিজের অজান্তে অনেক রোগ-ব্যধির হাত থেকে শরীরকে মুক্ত রাখা সম্ভব।


Comments

Popular posts from this blog

নয়ন তারা

কালমেঘ

বহেড়া